প্রকাশিত: ২৭/০৮/২০১৮ ৫:২৪ পিএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক- মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটিয়েছে। আইন প্রয়োগের নামে ভয়ঙ্কর ওই অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিৎ। সোমবার মিয়ানমারে জাতিসংঘের ইন্ডিপেনডেন্ট ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তাদের প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করেছে।

এতে বলা হয়েছে, অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকার বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা ছড়ানোর, নথিপত্র ধ্বংসের সুযোগ করে দিয়েছে এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে সংখ্যালঘূ সম্প্রদায়কে সুরক্ষায় এবং রাখাইন, কাচিন ও শান রাজ্যে সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

গত বছর রাখাইনে রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি ৩০ টি পুলিশ চৌকিত সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এর  জের ধরে রাথাইনের উত্তরাঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা নিধন ও উচ্ছেদ অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। সেনাদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে এ পর্যন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,‘ গ্রামগুলো পুড়িয়ে দেওয়াসহ সেনাবাহিনী যে নির্যাতন চালিয়েছিল তা ছিল প্রকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকির সঙ্গে সম্পূর্ণ অসাঞ্জস্যপূর্ণ।’

জাতিসংঘের দেওয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী, গণহত্যা বলতে বোঝায় একটি জাতি, গোষ্ঠি, বর্ণ অথবা ধর্মীয় সম্প্রদায়কে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক ধ্বংষ করা হয় তাকে গণহত্যা বলা হয়। আন্তর্জাতিক আইনে এ ধরণের তকমা দেওয়া বিরল। তবে বসনিয়া, সুদান এবং ইরাক ও সিরিয়ায় ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের ওপর ইসলামিক স্টেটের অভিযানের পর ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।

জাতিসংঘের ইন্ডিপেনডেন্ট ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন,‘রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত অপরাধ এবং যে প্রক্রিয়ায় সেই অপরাধগুলো ঘটানো হয়েছে তা প্রকৃতিগত, গুরুত্ব ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে ভিন্ন প্রেক্ষিতে গণহত্যা সংঘটনের ইচ্ছার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ।’

চূড়ান্ত ২০ পাতার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘উপযুক্ত আদালত যাতে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গণহত্যায় দায় নির্ধারণ করতে পারে সেজন্য পদবি অনুযায়ী তাতমাদুর (সেনাবাহিনী) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও তাদের বিচারের মুখোমুখি করার পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনের একটি কপি মিয়ানমার সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত